মোস্তফা মিয়া ,পীরগঞ্জ,রংপুর থেকে
রংপুরের পীরগঞ্জে জেলা প্রশাসক কর্তৃক ইউপি সচিবের বদলির স্থগিতাদেশ না মেনে ক্ষমতার অপব্যবহার করে জেলা প্রসাশককে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে পাঁচগাছী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান।
প্রকাশ, গত ২২ মার্চ/২০২০ং তারিখ গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের জেলা প্রশাসকের কার্যালয় রংপুর এর ০৫-৫৫-৮৫০০-০১১-০৫-০২৭-১৯/২৫৪ স্বারকে উক্ত ইউনিয়ন সচিবকে ১২ নং ইউনিয়নে বদলির আদেশ দেয়া হয়। উক্ত আদেশে বলা হয় ৩১ মার্চ/২০২০ ইং তারিখের মধ্যে বদলিকৃত সচিব দ্বয়কে স্ব স্ব কর্ম স্থলে যোগদান করতে হবে। অপরদিকে সরকারি কাজের সুবিধার্তে পুনরায় গত ২৫ মার্চ/২০২০ ইং তারিখে উক্ত কার্যালয় হতে ০৫-৫৫-৮৫০০-০১১-০২৭-১৯/২৭৮ স্বারকে উক্ত আদেশ স্থগিত করে ১১ ও ১২ নং ইউপি চেয়ারম্যান, সচিবদ্বয় এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর কার্যালয়ে মেইলসহ চিঠি পাঠিয়ে দেয় জেলা প্রশাসক- রংপুর। ২৬ মার্চ/২০২০ ইং তারিখেই পাঁচগাছীতে কর্মরত সচিব আব্দুল হালিম চেয়ারম্যান লতিফকে অবগত করে ইমেইল থেকে চিঠিও বের করে দেন। পাশাপাশি যথানিয়মে উক্ত সচিব অফিস করাসহ দাপ্তরিক কাজকর্ম পরিচালনা করতে থাকে। কিস্তু চেয়ারম্যান সাফ জানিয়ে দেয় যে, ১২ নং মিঠিপুর ইউনিয়নে কর্মরত সচিব সাজ্জাক মিয়া হচ্ছে আমার পাঁচগাছী ইউনিয়নের বৈধ সচিব। সেই সাথে সচিব আব্দুল হালিমকে বিভিন্ন সময় দাপ্তরিক কাজে নানা ভাবে বাধার সৃষ্ঠি করা সহ রাত্রিবেলা করে চেযারম্যানের কার্যালয়ে এসে সাজ্জাক মিয়ার কাছে অবৈধ ভাবে বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজে স্বাক্ষর নেয় চেয়ারম্যান। বিষয়টি জেলা প্রশাসক অবগত হলে গত ১১ মে/২০২০ ইং তারিখে সচিব সাজ্জাককে ১২ নং ইউপি থেকে ৬ নং টুকুরিয়া এবং টুকুরিয়া ইউপি সচিবকে ১২ মিঠিপুর ইউপিতে বদলি করে। উক্ত আদেশে বলা আছে ১৪ মে/২০২০ ইং তারিখের মধ্যে বদলিকৃত সচিবদের স্ব স্ব কর্মস্থলে যোগদান করতে হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় টুকুরিয়া ইউপি সচিব মিঠিপুর ইউপিতে যোগদান করলেও মিঠিপুর ইউপি সচিব সাজ্জাদ টুকুরিয়া ইউপিতে আজও যোগদান করেনি। ফলে টুকুরিয়া ইউপির দাপ্তরিক কাজের নানা জটিলতার সৃষ্ঠি হচ্ছে বলে জানান টুকুরিয়া চেয়ারম্যান আতাউর রহমান।
এ ব্যাপারে সরেজমিনে খোজ নিতে গিয়ে সচিব সাজ্জাদ এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, ২২ মে বদলির আদেশ পাওয়ার পর আমি ২৪ মে পাঁচগাছী ইউপি পরিষদের চেয়ারম্যান এর নিকট যোগদান করেছি। পাশাপাশী চেয়ারম্যান লতিফ বলেন, আমি ২৪ মার্চ সচিব সাজ্জাককে যোগদান করে নেয়ার পর ২৫ মার্চ জেলা প্রশাসক স্টে-অর্ডার দিয়েছে কাজেই আমি সঠিক আছি।
অপরদিকে উক্ত ইউপি পরিষদে কর্মরত সচিব আব্দুল হালিম বলেন, বিভিন্ন সময়ে চেয়ারম্যানের বিভিন্ন দুর্নিতী ও অনিয়মে আমি সাড়া না দেয়ায় আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছে। পাশাপাশী জেলা প্রশাসকের আদেশকেও করছে হেয় প্রতিপন্ন। আমি জেলা প্রশাসকের আদেশ মোতাবেক এখানকার বৈধ সচিব। জেলা প্রশাসক মহোদ্বয় আমার প্রতি যা নির্দেশ করবে আমি সে নির্দেশ মেনেই কাজ করব। চেয়ারম্যান আমাকে অফিস করতে দিবেনা বলে ৫ জুন থেকে ৯ জুন/২০২০ ইং পর্যন্ত আমার কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয় এবং বলে আমি পাঁচগাছী ইউপির জেলা প্রশাসক। পরে আমি বিষয়টি প্রশাসনকে অবগতি করলে ৯জুন পীরগঞ্জ থানা পুলিশ এসে আমার কার্যালয়ের তালা খুলে দেয়।
এদিকে পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে খোজ নিয়ে জানাযায়, চেয়ারম্যান এপ্রিলের ৫ তারিখের পরে ব্যাক-ডেট তারিখ দিয়ে সচিব সাজ্জাককে যোগদান দেখিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজ পত্রাদি জমা করায় তা বৈধতা পায়নি। সচিব সাজ্জাক ও চেয়ারম্যান লতিফ জেলা প্রশাসকের আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক আসিব আহসান মহোদ্বয় বলেন, এ ব্যাপারে উভয়ের বিরুদ্ধে জরুরী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এলাকাবাসীসহ উক্ত ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি বাবলু মিয়া, সাধারন সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, উক্ত ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড সম্পাদক আনারুল ইসলাম ও ৫ নং ওয়ার্ড সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, বিশিষ্ঠ ব্যবশায়ী ও সমাজ সেবক বটতলি বাজার জাহিদ মিয়া এবং দশমৌজা দ্বিমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর ছাত্তার মিয়াসহ একাধিক ব্যাক্তি জানান,চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান লতিফ দীর্ঘদিন ধরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি, রেশন, ভিজিএফ, ভিজিডি কার্ড সহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছে। এ সমস্ত দুর্নীতিতে সচিব হালিম সায় না দেয়ায় তার উপর এই অন্যায় করা হচ্ছে। এ সচিব অত্র ইউনিয়নে কর্মরত আছে বলে সাধারন মানুষ এখনও সহসায় সেবা পায়। তারা আরও বলেন যে, কতটা দুর্নীতি পরায়ন হলে একজন চেয়ারম্যান জেলা প্রশাসকের আদেশ অমান্য করতে পারে তা অনায়াসেই বুঝা যায়। এ দুর্নিতী বাজ চেয়ারম্যানের খুটির জোর কোথায় ? জরুরী ভিত্তিতে তদন্ত স্বাপেক্ষে জেলা প্রশাশকের আদেশ অমান্যকারী সচিব সাজ্জাক ও চেয়ারম্যান লতিফের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি জনিয়েছেন এলাকাবাসী।